About Me

I am like a pebble lying beside the road for ages. I observe and think. Sometimes I want things to be changed. But I am not an active person at all. So I just lie down and watch the play taking place around me. Somehow I enjoy the solitude I live in. I am happy with the package I came with. This beautiful earth, sunshine and rain…

Tuesday, February 17, 2015

আবার বছর কুড়ি পরে – ৪

 আজকের নিরিখে দেখলে আমাদের তৎকালীন জীবনযাত্রা বড্ড বেশি সাধারণ ছিল। বন্ধুত্ব এমন ছিল যে একদিন স্কুলে যেতে না পারলে ফাঁকা ফাঁকা লাগতো। গরমের ছুটি, পুজোর ছুটিতে পোস্টকার্ড ভরে চিঠি লিখতাম। একটু বড় হওয়ার পর, যখন কাছাকাছি থাকা বন্ধুদের বাড়ি যাওয়ার পার্মিশন পাওয়া যায় মায়েদের থেকে,  তখন কোনদিন স্কুলে যেতে না পারলে বেস্ট ফ্রেন্ডদের থেকে চিরকুটও আসতো। অথচ আজকের মত জন্মদিনের পার্টি ছিল না। আমরা কেউ কারোর জন্মদিন জানতামই না। আসলে সকলেই তো ছিলাম মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে। অত ঘটাপটার জন্মদিন আমাদের বাড়িতে হত না। ক্লাস সিক্সেই একবার আমাদের সেকশনের একটি মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে স্কুলের মধ্যে। ডাক্তার ডাকা হয়। জানা যায় মেয়েটি বেশ কদিন ধরে কিচ্ছু না খেয়ে স্কুলে আসছিল। 


আমাদের জীবনে প্রাচুর্যের কোন জায়গা ছিল না। অভাবও যে তেমন বুঝেছি সেই সময়ে তা বলা যায় না। এক এক দিন এক একটা গান দিয়ে স্কুল শুরু হত। নাইন থেকে টুয়েলভ –এই চার ক্লাসের বাছাই করা কিছু মেয়ে ছিল লীড সিঙ্গার। গানের আগে হত পাঠ। একটা কোটেশনের খাতা ছিল। সুপ্রিয়াদি সেটার দেখভাল করতেন। রোজ সকালে সেই খাতা থেকে একটি কোটেশান পাঠ করা হত। খাতাটা জীর্ণ হয়ে এসেছিল। টেনে পড়ার সময় সুপ্রিয়াদি আমাকে কোটেশানগুলো একটা নতুন খাতায় তুলতে দেন। কিছু কোটেশান তুলেছিলাম। সব কটা পারি নি। জানি না সে খাতা আজও আছে কিনা। পাঠের পর গান হত। “জন গন মন অধিনায়ক”, “আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে”, “শুভ কর্মপথে ধর নির্ভয় গান” – এই গানগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হত। আমাদের ব্যাচের সুদর্শনা অবাক করা গান গাইতো। এমনিতে সুদর্শনা ছিল খুব দুষ্টু। সব সময়ে ওর মাথায় কিছু না কিছু চলত। কিন্তু গান গাওয়ার সময় ওর সব দুষ্টুমি কোথায় যে উধাও হয়ে যেত! কোন জগতে যে চলে যেত ও কে জানে! আর যারা ওকে শুনতো তারাও। এখনও মনে পড়ে আমরা মাঠে দাঁড়িয়ে আছি লাইন করে। সুদর্শনা গাইছে – “আমার যেদিন ভেসে গেছে চোখের জলে”।  আস্তে আস্তে সেই মাঠ, চারুশীলা স্কুল, আমাদের দিদিমনিরা, আমরা কোথায় মিলিয়ে যাচ্ছি। বার বার ঘুরে ফিরে শুধু ধাক্কা খাচ্ছি – “তার ছিঁড়ে গেছে কবে , তার ছিঁড়ে গেছে কবে – একদিন কোন হাহারবে তার ছিঁড়ে গেছে কবে – সুর হারায়ে গেল পলে পলে...”


মেয়েদের স্কুলে সারাদিন মেয়েদের সাথেই মেলামেশা। ছেলেদের প্রতি কৌতুহল তো ছিলই। তার অনেকটাই অজানা ভয় মিশ্রিত। ছেলে আর মেয়ে যে বন্ধু হওয়া যায় তা অনেকদিন পর্যন্ত জানতাম না। বা জানতাম হয়তো, কিন্তু দেখতাম না। আসলে খোলাখুলি মেলামেশার সুযোগ ছিল না তো। তাই যদি বা কখনো মেলামেশার সম্ভাবনা তৈরী হয়, লোকজন ধুপধাপ প্রেমে পড়ে যেত। তার মধ্যে অনেকগুলো টিকতো না। আবার কয়েকটা সসম্মানে সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। রাখী যখন প্রসেনজিতের প্রেমে পড়ল, রাখীর চেয়ে আমরা কিছু কম উত্তেজিত ছিলাম না। সরস্বতীপুজোর দিন আড়চোখে রাখীর সাইকেলাসীন হার্টথ্রবকে দেখে নেওয়া। তারপর তার চুলচেরা বিচার। সেই সম্পর্ক আজ একুশ বছরে পা দিল। বড় হয়ে ওঠার কোন গল্পই কি সম্পূর্ণ হয় ওদের ছাড়া!


ছেলেতে মেয়েতে মেলামেশায় বাধা ছিল। অথচ সেই সদ্য কিশোরীবেলায় – “আমার চোখে তো সকলই শোভন, সকলই নবীন, সকলই বিমল”। হৃদয় টইটম্বুর, মেলে ধরি কার হাতে? ফলত স্কুলের পেছনের দেওয়ালে ছেলের নাম প্লাস মেয়ের নামের পাশাপাশি মেয়ের নাম প্লাস মেয়ের নাম দেখতে পাওয়া আশ্চর্য ছিল না। উঁচু ক্লাসের কোন কোন মেয়েকে ভালো লেগে যায়। ছুতোয় নাতায় তাদের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হয়। তাদের একটা কাজ করে দিতে পারলে জীবন ধন্য মনে হয়। কয়েক বছর পর কলেজে অ্যাডমিশন মিললে উঁচু ক্লাসের দিদিদের গোহারান হারিয়ে দিয়ে উঁচু ক্লাসের দাদারা হৃদয়াকাশে বিরাজ করতে লাগল।


এইখানে একটা কথা লিখে রাখা দরকার। তখন আমরা হোমোসেক্সুয়ালিটির নামও শুনিনি। হয়তো সে কারনেই মেয়েতে মেয়েতে ভালোবাসা, চিঠি দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে আমরা অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি। শরীর সম্পর্কে সচেতনতাও একেবারেই ছিল না। আমাদের মধ্যে যারা পরবর্তী কালেও সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষন বোধ করেছে তারা সেই মত জীবনসঙ্গী খুঁজে নিয়েছে। কাজটা সহজ হয়নি। কাছের লোকের থেকেই বাধা এসেছে বেশি। তবুও রোজ যুদ্ধ করতে করতে একটু একটু করে নিজের বিশ্বাসের কাছে পৌঁছচ্ছে তারা।


এই স্রোতের বিপরীতে দাঁড় বেয়ে ক্ষয়ে যাওয়া মানুষ গুলোর জন্য; রাখী-প্রসেনজিতের মত যারা দীর্ঘ দুই দশক ধরে নিজের বিশ্বাসে স্থিত তাদের জন্য; যাদের বিশ্বাস ভেঙেছে বার বার, তবুও যারা উঠে দাঁড়িয়েছে কারন বিশ্বাসই এক মাত্র পথ – এদের সবার জন্য, তোদের জন্য এই গান –


Imagine there's no heaven

It's easy if you try

No hell below us

Above us only sky


Imagine all the people

Living for today


Imagine there's no countries

It isn't hard to do

Nothing to kill or die for

And no religion, too


Imagine all the people

Living life in peace


You may say I'm a dreamer

But I'm not the only one

I hope someday you will join us

And the world will be as one


No comments:

Post a Comment