আজকের বিশেষ খবর - রাহুল গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, সীতারাম ইয়েচুরি সহ নজনের নামে দেশদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে এফ-আই-আর দায়ের হয়েছে। খবরটা শুনে আমার বেশ মজা লেগেছে। সিডিশন অ্যাক্ট যে কতখানি হাস্যকর তা দেখানোর জন্য এর চেয়ে হাতে গরম উদাহরণ আর পাওয়া যেত না। এই নজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হল - দিল্লী পুলিশ কানাহাইয়া কুমারের নামে দেশদ্রোহের অভিযোগ এনেছে জানা সত্ত্বেও এনারা জেএনইউ গিয়েছিলেন এবং দেশদ্রোহের সমর্থন করেছেন। রাহুল গান্ধীরা কি কারণে জেএনইউ গিয়েছিএলেন তার তদন্ত করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। আমরা বরং দেখে নিই এনাদের নামে যে ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে এই ধারাটি কি।
এই ব্যাপারে আমার বন্ধু অনির্বাণের কয়েকদিন আগে করা একটি ফেসবুক পোস্টের সাহায্য নেব। অনির্বাণ যেমন লিখেছিল আমি সেভাবেই তুলে দিচ্ছি। আপনারা চাইলে Section 124A গুগুল সার্চ করে মিলিয়ে নিতে পারেন।
Section 124A (Sedition) as it read in the 1860 original version of the Indian Penal Code:
Whoever, by words, either spoken or written, or by signs, or by visible representation, or otherwise, brings or attempts to bring into hatred or contempt, or excites or attempts to excite disaffection towards [Her Majesty or](1) the Government established by law in [British India](2), [British Burma](3) shall be punished with [Transportation for life or any shorter term](4), to which fin...e may be added, or with imprisonment which may extend to three years, to which fine may be added, or with fine.
Now how do we get today's version of the same section after corrections/ amendments/ substitutions post independence?
Drop (1) and (3)
Replace (2) by India
Replace (4) by Imprisonment for life.
And, bingo!! Do we really need to go into the intent of the authors of the original version?
সোজা বাংলায় এই আইনটি আমাদের বৃটিশ উত্তরাধিকার। বৃটিশ আমলে এই আইনে এমন অনেকে অভিযুক্ত হয়েছেন যাঁদের আমরা পরবর্তীকালে দেশনায়ক হিসেবে সম্মান করেছি। বৃটিশ আমলের সব জিনিসই খারাপ এমন কথা আমি বলি না। কিন্তু মজার ব্যাপার, যাঁরা এই আইন দেখিয়ে টপাটপ লোকজনকে জেলে পুরতে চাইছেন তাঁরাই কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করেন, পশ্চিমা প্রভাবকে সন্দেহের চোখে দেখেন। তাঁদের আমি শুধু এটাই মনে করিয়ে দিতে চাই সেকশন 124A ভারতীয় সংস্কৃতি নয়, এটা একান্তই পশ্চিমা আমদানী।
সংস্কৃতির কথা যখন উঠলই তখন একবার ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন নিয়ে প্রাচীন ভারত কি ভাবত দেখে নেওয়া যাক। ছোটবেলায় সহায়ক পাঠে উপনিষদের গল্প, পুরাণের গল্প আমার খুব প্রিয় ছিল। এই বইগুলোতেই আমি যম ও নচিকেতার গল্প পড়ি, উদ্দালক ও শ্বেতকেতুর গল্প পড়ি, গার্গী ও যাজ্ঞবল্ক্যের গল্প পড়ি। এগুলো সবই প্রশ্নোত্তরের গল্প। নচিকেতা যমের কাছে মৃত্যুর স্বরূপ জানতে চাইছেন। শ্বেতকেতু আত্মার স্বরূপ জানতে চাইছেন। গার্গী ব্রহ্মের স্বরূপ জানতে চাইছেন। ভারতের সংস্কৃতি চিরকালই প্রশ্ন করার অধিকারকে মান্যতা দিয়েছে। মহাভারত সকলেই পড়েছেন। না পড়ে থাকলেও বি আর চোপড়ার টিভি সিরিয়াল তো অবশ্যই দেখেছেন। সেখানেও দ্রৌপদী ভরা রাজসভায় যুধিষ্ঠিরকে ভর্ত্সনা করছেন। যুধিষ্ঠির রাজা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে সেই নিন্দা সহ্য করতে হয়েছে। যুদ্ধের শেষে সন্তানহীনা গান্ধারী কৃষ্ণকে নির্বংশ হওয়ার অভিশাপ দিয়েছেন। যদিও তিনি জানতেন কৃষ্ণ ভগবানের অংশ, তবু অভিশাপ দেওয়া আটকায় নি। কৃষ্ণও মাথা পেতে সেই অভিশাপ নিয়েছেন। পদমর্যাদায় খাটো হলেই বিনাপ্রশ্নে সব অন্যায় মেনে নিতে হবে ভারতীয় সংস্কৃতি একথা বলে না। ভারতীয় সংস্কৃতি বরং শেখায় অন্যায় যুদ্ধের শেষে অর্জুনের হাত থেকেও গান্ডীব খসে যায়, ভগবানও সবংশে ধ্বংস হন।
নির্বংশ হওয়াকে কি হিন্দী অনুবাদে "বরবাদী" বলা চলে? জেএনইউতে সেরকমই কিছু শোনা যাচ্ছিল না?
No comments:
Post a Comment