মাসখানেক একটানা রান্নাবাটি করে আজ অন্তরাত্মা বিদ্রোহ করলো। কিছুতেই রাঁধবো না। বার্গার কিং, ওয়েন্ডিস, এমনকি ম্যাকও চলবে। সাথের লোকটি এই সংকল্পে ঘাবড়ে গিয়ে সুড়সুড় করে গাড়ির ইঞ্জিন চালু করল। আমি ঘরের পাজামাতেই একখানি মাস্ক সাথে নিয়ে তার পাশে গিয়ে বসলাম। ও হ্যাঁ, আমার চীনে বন্ধুর বাড়ি থেকে মাস্ক এসেছে, সে আবার তার সঞ্চয় থেকে আমায় পাঠিয়েছে কয়খান। হুঁ হুঁ বাবা, বন্ধু ভাগ্য নিয়ে কেউ কম্পিট করতে এসো না। রাস্তায় গাড়ি প্রায় নেই। নিরিবিলি শহর। ম্যাক বা বার্গার কিংএর দুর্ভাগ্য পোহাতে হল না। একখানি আর্বিস খোলা পাওয়া গেল। ড্রাইভ থ্রুতে খাবার নেবো। তাকে বললাম, পেমেন্ট করা আর অর্ডার ডেলিভারি নেওয়ার সময়ে মাস্ক পরিস, তাহলেই হবে। সে স্বাস্থ্য সচেতন। রিমোট অর্ডার প্লেসিংএর সময়েই মাস্ক পরে নিল। তারপর প্রতীক্ষা পেমেন্ট উইন্ডোর সামনে।
- উহ, মাস্কে কি গন্ধ রে! অনুপম বলছিল, এ জিনিস পরে বেশিক্ষণ থাকা যায় না
- এখন খুলে রাখ না, পেমেন্ট নিতে এলে পরবি
- না না, পরেই থাকি
মিনিট দুয়েক বাদে জানলা খুলল। পুরনো ইংরিজি সিনেমাতে দেখেছি মহিলা দেখলে জেন্টলম্যানরা টুপি খুলে অভিবাদন জানান। আমার পাশের জেন্টেলম্যানটি অবিকল সেই ভঙ্গীতে মাস্কটি মুখ থেকে নামিয়ে পেমেন্ট সংগ্রাহক মহিলাটির দিকে "হাউ আর ইউ" ছুঁড়ে দিলেন।
- মিঠুন, মুখে চাপা
- হ্যাঁ হ্যাঁ
মুখ ঢাকলেও, নাক ঢাকতে বড়ই লজ্জা পেলেন জেন্টেলম্যানটি। পেমেন্ট চোকানো হল।
- হ্যাঁ রে, তুই গাড়ির মধ্যে মাস্ক পরে রইলি, আর লোকের সামনে এসে খুলে দিলি?
- কি করে যেন রিফ্লেক্সে হয়ে গেল। মনে হল মুখ ঢাকা থাকলে ও আমার কথা শুনতে পাবে না।
- আচ্ছা ঠিক আছে, খাবার নেওয়ার সময় মুখ ঢাকিস।
- এই তো, এখনই ঢেকে নিচ্ছি।
- এখন না করলেও চলবে। খাবার নেওয়ার সময় ভুলিস না।
মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা। খাবার নেওয়ার জানলায় মহিলাকে দেখা গেল আবার।
- মাস্ক পর, মাস্ক পর
পরলো সে তড়িঘড়ি। এবং আবার, ভদ্রা জানলা খোলা মাত্র, অভিবাদনের কায়দায় মুখোস খুলে,
- থ্যাংকস আ লট
- মিঠুন, মুখ
- ইয়েসস (মুখোস টানতে টানতে) হ্যাভ আ গুড নাইট
খাবার নিয়ে ড্রাইভ ওয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসার পথে,
- মিঠুন, তুই আবারও..
- এই তো, পরে নিয়েছি
No comments:
Post a Comment