About Me

I am like a pebble lying beside the road for ages. I observe and think. Sometimes I want things to be changed. But I am not an active person at all. So I just lie down and watch the play taking place around me. Somehow I enjoy the solitude I live in. I am happy with the package I came with. This beautiful earth, sunshine and rain…

Friday, February 26, 2010

ছবির কথা - ২ (The Old Guitarist - Pablo Picasso - 1903)


আজ ইনি এলেন আমার ঘরে। প্রথম কবে দেখেছিলাম? স্মৃতি বলছে নিউ ইয়র্কে – মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টস – সাল ২০০৭। মেটের লগবুক বলছে – ঐ সময় তো ইনি এখানে ছিলেন না। সেটাই নিশ্চয় সত্যি। অথচ মন বারবার বলছে পিকাসোর ব্লু-পিরিয়ডের এই নিদর্শনটি দিয়েই আমার ছবি ভালোলাগার শুরু। আজ সেই ছবির একটি প্রিন্ট স্থান পেয়েছে আমার ঘরের দেওয়ালে।

কি গাইছে এই বুড়ো গীটারবাদক? কাঠির মত হাত-পা, নুয়ে পড়া ঘাড়, চক্ষু কোটরাগত, ছেঁড়া জামার ফাটল হাঁ করে আছে কাঁধের কাছে – তবু সে গান গায়! কি গান গায়? জীবনের কোন অতল থেকে রস নিঙড়ে আনে সে?

তার কাছে গিয়ে শুনি সে বিড়বিড় করছে – “কেন মেঘ আসে হৃদয় আকাশে, তোমারে দেখিতে দেয় না – মোহ মেঘে – অন্ধ করে রাখে – তোমারে দেখিতে দেয় না – মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?” ধুলোভরা রাস্তার একপাশে বসে সে বারবার অবুঝ আবেগে প্রশ্ন করে – “চিরদিন কেন পাই না?” পথচারী হেঁটে যায়। কেউ উপেক্ষায়, কেউ উপহাসে। মাঝেমধ্যে দয়ার মুদ্রা ছুঁড়ে দেয় কেউ কেউ। তার কোন বিকার নেই। তার যে মস্ত অভিমান। তার মস্ত দুঃখ। সে তো প্রানপনে চায়। কিন্তু সাধ্য কই! হয় না, হয় না। কিছুতেই হয় না। তার চোখের গুহায় নৈরাশ্যের হলকা। তার গালভাঙা শীর্ণ মুখে জমাট অভিমান। “এতো প্রেম আমি কোথা পাবো নাথ, তোমারে হৃদয়ে রাখিতে”। এইটুকু ভাঙাচোরা পাঁজরায় কোথায় রাখবো তোমায়? কোথায় বসাবো? কেমন করে বইবো? তুমি আপনি না এলে? এই গানটুকু সর্বস্ব করে পথে নেমেছি তাই। আমার শরীরে ধুলো, বসনে ধুলো, মরমে ধুলো – ধুলোমাখা আমি ধুলোর মধ্যে তোমায় খুঁজি। খুঁজতে খুঁজতে অন্ধ হয়ে যাই। তবু খুঁজে বেড়াই। নেশাতুরের মত। একটি বার কাছে এসো। নাও আমায়...

ছবির কথা - ১ (The Girl with Pearl Earring - Johannes Vermeer)

[এই ছবিটি প্রিয়তম ছবিগুলির মধ্যে পড়বে না। তবে একটি অর্কুট কমিউনিটিতে ছবির গল্প লিখতে গিয়ে এই ছবিটিকে বেশ ভালোবেসেই ফেললাম।]


এই ছবিটা দেখলেই মনে হয় মেয়েটা যেন কারোর জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু সে কবে আসবে বা আদৌ আসবে কিনা তা মেয়েটির জানা নেই। অনেকদিন আগে মেয়েটা তাকে দেখেছিল। সে হয়তো লক্ষ্যও করে নি মেয়েটিকে। কি ভাবেই বা করবে। মেয়েটার না আছে তেমন চোখে পড়ার মত চেহারা। না পারে সে ভালো করে কথা বলতে। সত্যি বলতে কি কোন কাজই তেমন গুছিয়ে করার ক্ষমতা মেয়েটির নেই। রোজ সকালে উঠেই যে তার মনে হয় - আজ হয়তো সে আসবে - অনেকদিন আগে শোনা একটা গলার আওয়াজ মনে পড়লেই বুক ছলাত করে ওঠে - এই সোজা কথাটাই কি সে স্বীকার করতে পারে কারোর কাছে! মুক্তোর দুলটা ওর মায়ের। ওর একমাত্র দামী জিনিস। এককালে সে রোজ যেত এই পথ দিয়ে। একটা কালো টয়োটা করোলাতে। রকির কোলঘেঁষা এই একহারা শহরের ঘুপচি কফিশপে এককাপ কফি খেত। এদিকেই কোথায় যেন ছিল তার ইউনিভার্সিটি। তারপর বহুদিন কেটে গেছে সে আর আসে না। মেয়েটা জানে তার কাজ ফুরিয়েছে, সে আর আসবে না। তবু ভোরের আলো জানলার বাইরের ম্যাপল পাতাগুলো ছোঁয়া মাত্র তার মন বদলে যায়। কত কিছুই তো অসম্ভব ঘটে জগতে। হতেও তো পারে আজ তেমনই এক অসম্ভব দিন। 'আসবে/আসবে না' 'আসবে/আসবে না' - বুকের ভেতর লাবডুব চলতে থাকে - সে কাঁপাকাঁপা হাতে পরে নেয় তার মুক্তোর দুল। কফিশপের ঝাঁপ তোলে। বেলা গড়ায়। কাউন্টারে রাখা ডার্ক রোস্টেড কলাম্বিয়ানটা ফুরিয়ে আসে। মেয়েটি অভ্যস্ত হাতে গ্রাইন্ড করতে থাকে সুগন্ধী কফিবিন। একটা কালো গাড়ী এসে দাঁড়ালো বোধহয়। সে চকিতে মুখ ফেরায়। কানের মুক্তোটা ঝিলিক দিয়ে ওঠে...