এ এক অবিন্যস্ত পথ। ধান কেটে নেওয়া শুকনো খোড়ো জমির মধ্যে দিয়ে এঁকে বেঁকে চলেছে। হঠাৎ করে শুরু হয়ে হঠাৎই শেষ হয়ে গেছে। কোন পথের শেষে ঘর থাকে। কোন পথের শেষে থাকে দিগন্তের হাতছানি। এ পথের শেষে শুধুই রুখু জমি। কেটে নেওয়া ধানের গোড়া। তীক্ষ্ণ কঠিন ফলার মত পায়ে বেঁধে। হয়তো আরেকটা পথ খুঁজে পাওয়া যাবে ওইখানে পৌঁছালে। হয়তো সেই পথও কোনদিন কারোর কাছে পৌঁছে দেবে না। এ পথ থেকে সে পথ – সে পথ থেকে ঘুরে ফিরে আবার এক উদ্দেশ্যহীন একক যাত্রা – অন্ধ মাছির মত ঘুরপাক খেতে খেতে একদিন ফুরিয়ে যেতে হবে হেমন্তের বিবর্ণ দুপুরে। “অর্থ নয়, কীর্তি নয়, সচ্ছলতা নয় – আরো এক বিপন্ন বিস্ময় আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতর খেলা করে। আমাদের ক্লান্ত, ক্লান্ত করে”। সুস্থির হয়ে ঘরে বসে থাকতে দেয় না। বারবার লোভ দেখায়। এক অলীক প্রশান্তির লোভ। হয়তো ওই কালচে নীল দিগন্তে যেখানে কাকের দল তারস্বরে চিৎকার করে চলেছে সেখানেই আকাশ ধুয়ে নেমে আসবে স্নিগ্ধ শুশ্রূষার জল। হবে সব ক্লান্তির অবসান। কাকগুলো কোনদিকে উড়ছে বোঝা যাচ্ছে না। হয়তো অতদূর পৌঁছানোর আগেই নখের আঁচড়ে অন্ধ করে দেবে এই চোখ। অথবা কে জানে! ওরাও বুঝি উড়ে চলেছে সেই নির্জন দারুচিনি দ্বীপের সন্ধানে। কুন্ডলীকৃত ধোঁয়ামেঘ, জমাট অন্ধকারের মত নিবিড় বনানী ছাড়িয়ে অরুন্ধতী যেখানে জেগে আছেন বশিষ্ঠের কাঁধের কাছে অবিচল। সেইখানে।
খন্ডিতাদের যাপিত জীবন
2 years ago